এই মডিউলে পূর্বঅভিজ্ঞতা থেকে আমরা জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১-এর আলোকে নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কৌশল পদ্ধতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। এ পর্যায়ে প্রথমেই নিচের প্রশ্নগুলো উত্তর আপনি একটু দেখুন এবং নিজে নিজে ভাবুন।
ক. শিক্ষক হিসেবে আপনার শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য বর্তমানে কী কি পদ্ধতি ব্যবহার করেন?
খ. শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে বর্তমানে যে পদ্ধতি/কৌশল ব্যবহার করেন তা শিক্ষার্থীর যোগ্যতা পরিমাপে কতটুকু কার্যকর বলে মনে করেন?

সূচীপত্র
- 1 নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কৌশল বা পদ্ধতি
- 2 নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন ও রিপাের্টিং ব্যবস্থা
- 3 স্তরভিত্তিক মূল্যায়ন কৌশল
- 4 পাবলিক পরীক্ষা
- 5 দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক পরীক্ষা
- 6 একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা
- 7 শিখন মূল্যায়নের মূলনীতি
- 8 সনদ বা রিপাের্টিং
- 9 শিখন পরিবেশের মূল্যায়ন
- 10 শিক্ষা ব্যবস্থার মূল্যায়ন
নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কৌশল বা পদ্ধতি
জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১-এর আলোকে মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে জানার জন্য নিচের ভিডিওটি দেখুন এবং নোট করে নিন।
নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন ও রিপাের্টিং ব্যবস্থা
মূল্যায়নের প্রকৃতি
মূল্যায়ন শিক্ষাক্রমের একটি অপরিহার্য ও অবিচ্ছিন্ন অংশ। এই শিক্ষাক্রম রূপরেখায় মূল্যায়নকে কেবল শিক্ষার্থীর শিখন মূল্যায়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে পুরাে শিক্ষাব্যবস্থার কার্যকারিতা মূল্যায়ন, শিখন পরিবেশের মূল্যায়ন ও সেই সঙ্গে শিখনের মূল্যায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রচলিত মূল্যায়ন ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে মুখস্থবিদ্যাভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে সরে এসে বহুমাত্রিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর বিভিন্ন মাত্রার জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবােধ, দৃষ্টিভঙ্গি ও চেতনা বিকাশের ধারাকে মূল্যায়নের আওতায় আনা হয়েছে। সকল ধরনের শিখন মূল্যায়নের ভিত্তি হবে যােগ্যতা।

শিখন মূল্যায়ন শিখন অগ্রগতি পরিমাপের জন্য কী ধরনের মূল্যায়ন কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে, এবং মূল্যায়ন থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত কীভাবে নানা পর্যায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার উপর শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য অর্জনের সাফল্যের মাত্রা অনেকাংশে নির্ভর করে।
শিখনের এই উত্তরাধুনিক যুগের সামাজিক গঠনবাদী ধারণা অনুযায়ী মূল্যায়ন কৌশল গতানুগতিক নয়। এছাড়া যােগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রমের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলাে জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবােধ, ও দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে আন্ত:সম্পর্ক বিবেচনায় নিয়ে যােগ্যতার পরিমাপ করা।
কাজেই জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবােধ ও দৃষ্টিভঙ্গিকে পৃথকভাবে মূল্যায়ন না করে এই উপাদানগুলাের মিথস্ক্রিয়ায় অর্জিত সক্ষমতার মূল্যায়ন করা জরুরি। এই মতবাদ (The theory of planned behavior-lcek Ajzen, 1991) অনুযায়ী
শিক্ষাক্রম রূপরেখায় মূল্যায়নের যে কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলাে হল:
শিখনকালীন মূল্যায়নের উপর গুরুত্ব দিয়ে বহুমাত্রিক উপায়ে মূল্যায়ন, শিখনের জন্য মূল্যায়ন (Assessment for learning) এবং মূল্যায়নের মাধ্যমে শিখন (Assessment as learning), পর্যবেক্ষণ, প্রতিফলনভিত্তিক ও প্রক্রিয়া নির্ভর মূল্যায়ন, ধারাবাহিক মূল্যায়ন, সতীর্থ মূল্যায়ন, অংশীজন মূল্যায়ন, মূল্যায়নে টেকনােলজির (অ্যাপস) ব্যবহার, মূল্যায়নে জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করা এবং ইতিবাচক ফলাবর্তন প্রদান।
এই শিক্ষাক্রমে মূল্যায়নের যেসকল বিষয় অনুসরণ করা হবে সেগুলাে হলাে:
ক. শিখনের জন্য শিখনকালীন মূল্যায়নের উপর গুরুত্ব আরােপ;
খ. পরীক্ষাভিত্তিক সামষ্টিক মূল্যায়ন হ্রাস;
গ. বিকল্প মূল্যায়ন (স্ব-মূল্যায়ন, সহপাঠী বা দল কর্তৃক মূল্যায়ন ইত্যাদি) ব্যবস্থা চালু;
ঘ. যােগ্যতার মূল্যায়ন নিশ্চিতকরণ;
ঙ. মূল্যায়নের মূলনীতি অনুসরণ;
চ. মূল্যায়নের ধারাবাহিক রেকর্ড সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা;
শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কৌশলের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তা নিচে চিত্রের মাধ্যমে উল্লেখ করা হল

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কৌশল বা পদ্ধতি
স্তরভিত্তিক মূল্যায়ন কৌশল
স্তরভিত্তিক মূল্যায়ন কৌশল এর সারসংক্ষেপ নিম্নে উল্লেখ করা হল-


শিক্ষার্থী মূল্যায়নে শিখনকালীন ও সামষ্টিক মূল্যায়নের সংমিশ্রণ করা হয়েছে। প্রারম্ভিক শ্রেণিগুলােতে শিখনকালীন মূল্যায়নের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে এবং ধারাবাহিকভাবে উঁচু শ্রেণিতে শিখনকালীন মূল্যায়ন কমিয়ে সামষ্টিক মূল্যায়নের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।
নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কৌশল বা পদ্ধতি
পাবলিক পরীক্ষা
শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষাক্রমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্যায়ন ব্যবস্থা থাকা প্রয়ােজন। মূল্যায়ন ব্যবস্থার অংশ হিসেবে উপযুক্ত পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতি নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
সারা বিশ্বে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে পরীক্ষা পদ্ধতির ওয়াশব্যাক ইফেক্ট (Washback Effect) এর কারণে শিক্ষাক্রমের অর্জন, শিখনশেখানাে পদ্ধতি, শিখন সংস্কৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। শেখার চেয়ে পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়াই মূল উদ্দেশ্য হয়ে যেতে পারে।
শিক্ষাক্রমে যােগ্যতাকে জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবােধের সমন্বয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। প্রচলিত পরীক্ষাপদ্ধতি সাধারণত শিক্ষার্থীর নিচুস্তরের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের (cognitive development) মূল্যায়ন করে।
তাই প্রচলিত পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতি বহাল রেখে শিক্ষাক্রমের মূল উদ্দেশ্য অর্থাৎ শিক্ষার্থীর জ্ঞানের পাশাপাশি দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং মূল্যবােধ অর্জন সম্ভবপর হবে না। তাই পাবলিক পরীক্ষায় সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি শিখনকালীন মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
শিক্ষাক্রম রূপরেখা অনুযায়ী,
• দশম শ্রেণির শেষে দশম শ্রেণির যােগ্যতা যাচাইয়ে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
• একাদশ শ্রেণি শেষে এবং দ্বাদশ শ্রেণি শেষে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির
সম্মিলিত ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারিত হবে।
দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক পরীক্ষা
দশম শ্রেণির ১০ টি বিষয়ের মধ্যে ৫টি বিষয়ের (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান) ক্ষেত্রে সামষ্টিক মূল্যায়ন ও শিখনকালীন মূল্যায়ন উভয়ের ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করা হবে।
অবশিষ্ট ৫টি বিষয়ের (জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা , ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি) ক্ষেত্রে শিখনকালীন মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কৌশল বা পদ্ধতি
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা
i. ৩টি আবশ্যিক বিষয়ে ৩০% শিখনকালীন মূল্যায়ন ও ৭০% সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে;
ii. ৩টি নৈর্বাচনিক/ বিশেষায়িত বিষয়ে বিষয়-কাঠামাে ও ধারণায়ন অনুযায়ী সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি
এসাইনমেন্ট ও প্রজেক্টভিত্তিক মূল্যায়ন, ব্যবহারিক এবং অন্যান্য উপায়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের সুযােগ থাকবে;
iii. প্রায়ােগিক ১ টি বিষয় বা ঐচ্ছিক বিষয়ে হাতে-কলমে কাজের মাধ্যমে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে।
শিখন মূল্যায়নের মূলনীতি
ক. যেকোনাে ধরনের মূল্যায়নের ভিত্তি হলাে যােগ্যতা। জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবােধ যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। তবে জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবােধ বিচ্ছিন্নভাবে বিবেচনা না করে তাদের মধ্যে আন্তঃসংযােগ বিবেচনা করে মূল্যায়ন পরিকল্পনা করতে হবে।
খ. মূল্যায়নের বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশলের যথাযথ প্রয়ােগের মাধ্যমে যােগ্যতাভিত্তিক মূল্যায়নকে নিশ্চিত করতে হবে। মূল্যায়নের উদ্দেশ্য বিবেচনা করে মূল্যায়ন কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। কী মূল্যায়ন করতে হবে তার ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন পদ্ধতি ঠিক করতে হবে। মূল্যায়ন শুধুমাত্র পেপার-পেন্সিল পরীক্ষার ওপর নির্ভর না করে পর্যবেক্ষণ, পাের্টফোলিও, প্রতিফলনভিত্তিক ও প্রক্রিয়া নির্ভর মূল্যায়ন, ধারাবাহিক মূল্যায়ন, সতীর্থ মূল্যায়ন, অংশীজন মূল্যায়ন ও মুল্যায়নে টেকনােলজির (অ্যাপস) ব্যবহার করা যেতে পারে।
গ. শ্রেণিকক্ষে ও শ্রেণিকক্ষের বাইরে শিক্ষার্থীর বিভিন্ন অর্জনকে স্বীকৃতি দেয়ার পাশাপাশি তার পরিপূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশ ও দুর্বলতাসমূহ দূরীকরণের জন্য প্রয়ােজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করতে হবে।
ঘ. শিখনকালীন মূল্যায়ন সম্পূর্ণরূপে অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় পরিচালনা করতে হবে। শিখনকালীন মূল্যায়ন শিখন-শেখানাে কার্যাবলীর অংশ হিসেবে অনুশীলন করতে হবে।
ঙ. মূল্যায়নের রেকর্ড যথাযথ উপায়ে সংরক্ষণ করতে হবে। কিন্তু রেকর্ড সংরক্ষণের চাইতে মূল্যায়নের মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষাকে শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিতকরণে অধিক গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।
চ. মূল্যায়ন কৌশল এমনভাবে পরিকল্পনা করতে হবে যাতে এর ফলাফল ব্যক্তি-নিরপেক্ষ হয়। এক্ষেত্রে সতীর্থ মূল্যায়ন, স্ব-মূল্যায়ন, পাের্টফোলিও সংরক্ষণসহ প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন উপায় গ্রহণ করা যেতে পারে।
সনদ বা রিপাের্টিং
প্রচলিত নম্বরভিত্তিক সনদ বা রিপাের্ট কার্ডের পরিবর্তে পারদর্শীতার বর্ণনামূলক সনদ বা রিপাের্ট কার্ডের প্রচলন করা হবে। রিপাের্ট কার্ডে শিক্ষার্থীর বিভিন্ন যােগ্যতা অর্জনের অগ্রগতির প্রতিফলন থাকবে।
জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবােধ বিকাশের অবস্থা রিপাের্ট কার্ডে উল্লেখ থাকবে। রিপাের্ট কার্ডের মাধ্যমেই মূলত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়।
রিপাের্ট কার্ডের ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পরিবার যৌথভাবে শিক্ষার্থীর শিখন অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে পারে। শ্রেণিশিক্ষক সরাসরি অভিভাবকের নিকট রিপাের্ট কার্ড প্রদর্শন করবেন এবং শিক্ষার্থীর বিভিন্ন অর্জন ও উন্নয়নের দিক নির্দেশনা নিয়ে আলােচনা করবেন।
পাবলিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একইরকম ধারা অনুসরণ করা হবে। পাবলিক পরীক্ষার রিপাের্ট কার্ডেও শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবােধ বিকাশের অগ্রগতির প্রতিফলন শিখনকালীন মূল্যায়নের ফলাফলের ভিত্তিতে উপস্থাপন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শিক্ষার্থী মূল্যায়নের রিপাের্ট কার্ড এবং পাবলিক পরীক্ষার রিপাের্টকার্ড সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে প্রণয়ন ও প্রচলন করা হবে।
এক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সিস্টেমনির্ভর মূল্যায়ন ও রিপাের্টিং ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে যার মাধ্যমে মূল্যায়ন ও রিপাের্টিং এর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা যাবে।
অন্তবর্তীকালীন ও পাবলিক পরীক্ষায় পারদর্শিতার সনদের প্রচলনের পাশাপাশি নির্দিষ্ট যােগ্যতা, দক্ষতা, অধ্যায়, শ্রেণিকাজ বা ইভেন্ট শেষেও পারদর্শিতার সনদ প্রদানের প্রচলন করা যেতে পারে।
নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কৌশল বা পদ্ধতি
শিখন পরিবেশের মূল্যায়ন
যােগ্যতাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী কর্তৃক শিখন যােগ্যতা অর্জনের একটি প্রধান উপাদান হলাে শিখন পরিবেশ।
শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি শুধুমাত্র শিখন-শেখানাে সামগ্রী, শিক্ষক এবং শিখন-শেখানাে কৌশলের উপর নির্ভর করে না। কোন পরিবেশে শিখন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তাও এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাই শিখন অগ্রগতির পাশাপাশি শিখন পরিবেশ মূল্যায়ন শিক্ষাক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষাক্রম রূপরেখা শিক্ষার্থীর শিখন মূল্যায়নের পাশাপাশি শিখন পরিবেশের মূল্যায়নকে যথাযথভাবে গুরুত্ব প্রদান করেছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর, দপ্তর ও সংস্থা নিয়মিত শিখন পরিবেশ মূল্যায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
শিখন পরিবেশ মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল যথাযথ পর্যালােচনা করে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য উপযুক্ত শিখন পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষা ব্যবস্থার মূল্যায়ন
শিক্ষাক্রমের সফল বাস্তবায়নের জন্য সম্পূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থার মূল্যায়ন শিক্ষার্থীর শিখন মূল্যায়নের মতােই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ব্যবস্থা মূল্যায়নের মাধ্যমে একটি দেশ শিক্ষা ব্যবস্থায় কতটুকু উন্নয়ন করেছে তা বুঝতে পারে।
সেই সঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে শিক্ষা ব্যবস্থার কোন কোন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তা বুঝতে পারে।
এক্ষেত্রে জাতীয়ভাবে নমুনাভিত্তিতে শিক্ষার্থীর যােগ্যতাভিত্তিক মূল্যায়ন করা যায়। প্রচলিত ব্যবস্থায় বাংলাদেশে প্রাথমিক স্তরে ২০০২ সাল থেকে জাতীয় কৃতী অভীক্ষা (এনএসএ) ও মাধ্যমিক স্তরে ২০১৩ সাল থেকে Learning Assessment of Secondary Institutions (লাসি) প্রচলিত যার মাধ্যমে শিক্ষাক্রমে উল্লেখিত শিখনফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীর শিখন অর্জন মূল্যায়নের মাধ্যমে জাতীয়ভাবে শিখন অর্জনের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
শিক্ষাক্রম রূপরেখায় শিক্ষাব্যবস্থা মূল্যায়নের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের জাতীয়ভাবে যােগ্যতাভিত্তিক মূল্যায়নের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব প্রদান করেছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বাের্ড (এনসিটিবি) পরবর্তি সময় মূল্যায়ন ও শিক্ষাক্রম উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জাতীয় মূল্যায়ন কৌশল ও পরিকল্পনা উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন করবে।
আপনার জন্য আরও কিছু তথ্য: