যেহেতু শিক্ষার্থীরা দিনের বিশেষ একটা সময় শিক্ষকদের সাথে থাকেন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শিক্ষকগণ চাইলে শিক্ষার্থীদের সমস্যা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পারেন।
আজকে পুরোটা সময় জুড়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকগণের পালনীয় নীতিগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। এতে আপনার মুক্তপাঠ শিক্ষকদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অনলাইন কোর্স অংশগ্রহন আরও সহজ হবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক-
সূচীপত্র
- 1 মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষক
- 1.1 প্রশ্ন ১: মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকদের পালনীয় নীতি বিবেচনা করলে, পিয়ালের সাথে কথোপকথনের সময় শিক্ষক আব্দুল হাই সাহেব নিচের কোন কোন নীতিগুলো অনুসরণ করেননি?
- 1.2 প্রশ্ন ২: পিয়ালের সাথে কথোপকথনের ক্ষেত্রে আব্দুল হাই সাহেব নিচের কোন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন?
- 1.3 প্রশ্ন ৩: শিক্ষক হাই সাহেবের কোন পদক্ষেগুলোকে আপনি কার্যকর বলে মনে করেন?
- 2 মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকের ভূমিকা কেইস স্ট্যাডি-২
- 3 মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকের ভূমিকা কেইস স্ট্যাডি-২ (মূল্যায়ন)
- 4 মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকদের পালনীয় নীতিসমূহ
মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষক
আশা করছি আজকের পাঠ শেষে আপনি মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকগণের পালনীয় নীতিসমূহ ব্যাখ্যা করতে পারবেন এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে পালনীয় নীতিসমূহ মেনে চলতে সচেষ্ট হবেন।
প্রথমে আমরা এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও দেখবো
আব্দুল হাই স্যার দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সহযােগিতা করার জন্য বেশ সুপরিচিত। তিনি লক্ষ করেন যে, সম্প্রতি অষ্টম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী পিয়াল, বিদ্যালয়ে বেশ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে, খেলাধুলাও আগের মতাে করে না। সে কারণে একদিন বিরতির সময় পিয়ালের সাথে আলাদা করে কথা বললেন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কথোপকথন
আব্দুল হাই স্যার: পিয়াল, তোমাকে ক্লাসে খুব একটা দেখি না। কোনো সমস্যা হচ্ছে?
পিয়ালঃ না, স্যার। কোনো সমস্যা নাই, সব ঠিক আছে।
আব্দুল হাই স্যার: আমি আসলে লক্ষ্য করেছি তুমি ক্লাসের সবার থেকে একটু দূরে দূরে থাকছো। কোনো সমস্যা হলে আমাকে নির্ভয়ে বলতে পারো।
পিয়ালঃ স্যার, আমি আসলে একটা কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে কিছুটা অনিয়মিত হয়ে পড়েছি। তবে আর হবে না।
আব্দুল হাই স্যার: খুবই ভাল। কি কাজ আমাকে কি একটু বলবে?
পিয়ালঃ আমি আসলে আমার এলাকার কিছু বন্ধুবান্ধবের সাথে একটা অনলাইন গেমসের টুর্নামেন্ট খেলছি অনেকদিন ধরে। খেলায় এগিয়ে থাকতে ইদানিং আগের চেয়ে একটু বেশি খেলছি।
আব্দুল হাই স্যার: ভিডিও গেমস! মোবাইলে এক আধটু গেমস খেলতে পারো। এরকম নেশার মত গেমস খেলা কি ঠিক?
পিয়ালঃ না স্যার। আমিও চেষ্টা করবো কম খেলার।
আব্দুল হাই স্যার: তোমার যা অবস্থা! আমার মনে হয়, তুমি তোমার স্মার্টফোন আগামী ১৫ দিনের জন্য তোমার বাবার কাছে রেখে দাও। মোবাইল হাতের কাছে না থাকলে খেলতে পারবে না, নেশাও চলে যাবে।
পিয়ালঃ আচ্ছা, স্যার।
আব্দুল হাইঃ আমি তোমাদের পিটি স্যারকে বলবো স্কুলে ফুটবল বা ক্রিকেট খেলার একটা টুর্নামেন্ট চালু করার জন্য। মাঠের খেলা শরীর আর মন দুটোই চাঙ্গা রাখে।
পিয়ালঃ জ্বি স্যার।
আব্দুল হাইঃ ঠিক আছে, তাহলে। আর কোন সমস্যা হলে আমাকে জানিও।
পিয়ালঃ জ্বি স্যার, জানাব।
পরবর্তীতে আব্দুল হাই স্যার তার কয়েকজন সহকর্মী এবং পিয়ালের বাবার সাথে বিষয়টি নিয়ে আলােচনা করলেন ও তাদেরকে পিয়ালের ব্যাপারে বিশেষভাবে খেয়াল রাখার অনুরোধ করলেন।
পিয়ালের সমস্যার কেইস ভিত্তিক মূল্যায়ন
উপরোক্ত কেইস স্ট্যাডি আপনি সম্পূর্ণ পড়ে থাকলে নিচের প্রশ্নগুলো উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন-
প্রশ্ন ১: মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকদের পালনীয় নীতি বিবেচনা করলে, পিয়ালের সাথে কথোপকথনের সময় শিক্ষক আব্দুল হাই সাহেব নিচের কোন কোন নীতিগুলো অনুসরণ করেননি?
i. বিশ্বাস অটুট রাখা
ii. শিক্ষার্থীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা
iii. নিরপেক্ষতা বজায় রাখা
iv. ক্ষতি না করা
v. উপরের সবগুলো
vi. উপরের কোনটিই নয়
প্রশ্ন ২: পিয়ালের সাথে কথোপকথনের ক্ষেত্রে আব্দুল হাই সাহেব নিচের কোন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন?
ক. শিক্ষার্থীর আচরণের প্রতি নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছেন
খ. শিক্ষার্থীর গোপনীয়তা রক্ষা করেছেন
গ. শিক্ষার্থীর ক্ষতি হয় এমন কিছু করেন নি
ঘ. শিক্ষার্থী যেন তার মনের কথা প্রকাশ করে সে জন্য অত্যধিক চাপ প্রয়োগ করেন নি
ঙ. উপরের সবগুলো
চ. উপরের কোনটিই নয়
প্রশ্ন ৩: শিক্ষক হাই সাহেবের কোন পদক্ষেগুলোকে আপনি কার্যকর বলে মনে করেন?
ক. বাবার কাছে ১৫ দিনের জন্য স্মার্টফোন জমা দেওয়ার পরামর্শ
খ. সহকর্মীদের সাথে পিয়ালের ব্যাপারে আলোচনা করা ও তার প্রতি আলাদাভবে খেয়াল রাখার অনুরোধ করা
গ. পিয়ালের বাবাকে অবহিত করা ও একইসাথে তাকে পিয়ালের সাথে শান্তভাবে কথা বলতে বলা
ঘ. ক্রিকেট বা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া
ঙ. উপরের সবগুলো
চ. উপরের কোনটিই নয়
মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকের ভূমিকা কেইস স্ট্যাডি-২

ইংরেজি শিক্ষক শরিফুল স্যার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি প্রশিক্ষণ পেয়েছেন এবং বর্তমানে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে তিনি সহায়তা করার চেষ্টা করেন।
তেমনই একজন শিক্ষার্থী হল নবম শ্রেণীর রাকিব। কিছুদিন ধরেই লক্ষ করেছেন যে – রাকিবের চোখের নিচে কালি পড়েছে এবং প্রায়শই স্কুলে বেশ অবসন্ন দেখা যায়।
যদিও পরীক্ষায় সে বরাবরের মতই ভালাে করছে, কিন্তু শ্রেণিকাজে তার অংশগ্রহণ কম। এসকল কারণে শরিফুল স্যার সিদ্ধান্ত নিলেন যে রাকিবের সাথে ক্লাসের বিরতিতে আলাদাভাবে কথা বলবেন।
আসুন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কথোপকথন শুনি-
শরিফুল স্যার: কেমন আছো রাকিব?
রাকিবঃ জ্বী স্যার, ভালো আছি।
শরিফুল স্যার: আমি আজকাল লক্ষ্য করেছি যে তোমাকে যেন কিছুটা ক্লান্ত দেখায় এবং এ নিয়ে আমি কিছুটা চিন্তিত। যদি শরীর ভালো না থাকে তাহলে হয়তো একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারো।
রাকিবঃ না স্যার, শরীর পুরোপুরি ঠিক আছে। এমনিতেই কিছুদিন ধরে আসলে ঘুম কম হচ্ছে ।
শরিফুল স্যার: শরীর ঠিক আছে জেনে ভালো লাগল। কিন্তু ঘুম কম হচ্ছে! তুমি কি কোন কিছু নিয়ে চিন্তিত?
রাকিবঃ না স্যার। তেমন কিছুই না।
শরিফুল স্যার: যদি তুমি কোন বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকো, যা অন্য কাউকে বলতে পারছো না, চাইলে আমাকে বলতে পারো। আমাকে যা কিছুই বল না কেনো, তোমার অনুমতি ছাড়া সে বিষয়ে অন্য কারো সাথে বলবো না।
রাকিবঃ স্যার আমার লাইফে বেশ অদ্ভুত একটা জিনিস ঘটে গেছে কিছুদিন আগে।
শরিফুল স্যার: জীবনে বড় কোন পরিবর্তন ঘটলে প্রভাব অন্যান্য কিছুর উপর পড়াটা খুব স্বাভাবিক। তুমি আমাকে খুলে বলতে পারো কি হয়েছে?
রাকিবঃ ঠিক জানিনা আসলে কিভাবে বলবো স্যার।
শরিফুল স্যার: তুমি নাও বলতে পারো। আবার যদি মনে করো পরে বলবে, সেক্ষেত্রে আমরা পরে কোনো এক সময়েও কথা বলতে পারি।
রাকিবঃ গত কয়েক মাস ধরে আমার একজন মেয়ের সাথে একটু বেশি রাত পর্যন্ত ফোনে কথা হয়, এজন্য ঘুম কম হয় আর দিনে ক্লান্ত লাগে। কিন্তু আমি চেষ্টা করছি যেন পড়াশোনায় কোনো ক্ষতি না হয়।
শরিফুল স্যার: এটা আসলেই তোমার জীবনে বড় একটা ঘটনা। তবে খুব ভালো যে তুমি চেষ্টা করছ এটা মানিয়ে নিতে এবং পড়ালেখার কোনো ক্ষতি না করতে। কিন্তু তুমি এটাকে অদ্ভুত সময় বলে মনে করছো কেনো?
রাকিবঃ কারণ এরকম আসলে কখনো লাগে নি। সবসময়ই একজন মানুষকে নিয়ে ভাবছি। ভালো লাগে আবার টেনশনও লাগে।
শরিফুল স্যার: হ্যাঁ, তুমি একটা নতুন অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছ এবং এরকম পরিস্থিতিতে উৎকণ্ঠা বোধ করা স্বাভাবিক। কিন্তু তোমার টেনশনের কারণটা কি বলবে?
রাকিবঃ যদি কোনভাবে আমাদের দুইজনের বাসায় কেউ জেনে যায় তো অনেক ঝামেলা হয়ে যেতে পারে।
শরিফুল স্যার: এ অবস্থায় তুমি কি আর কিছু করবে বলে ভেবেছো?
রাকিবঃ আমরা দুজনই চেষ্টা করছি পড়াশোনা ঠিকঠাক মত করতে। আর যদি কোন সমস্যায় পড়ে যাই তখন তখন সবার সাথে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করবো।
শরিফুল স্যার: তুমি খুব গুছিয়ে চিন্তা করে রেখেছ রাকিব। এমনকি জটিল পরিস্থিতি তৈরি হলেও কি করা যেতে পারে তা নিয়ে ভেবেছো।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ তোমাকে। পরবর্তিতেও যদি কখনো কথা বলতে চাও, নিঃসংকোচে জানিও।
রাকিবঃ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ স্যার। আপনার সাথে কথা বলে অনেকখানি হালকা লাগছে এখন।
মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকের ভূমিকা কেইস স্ট্যাডি-২ (মূল্যায়ন)
প্রশ্ন ১: শিক্ষক শরিফুল সাহেবের কোন পদক্ষেগুলো আপনি কার্যকর বলে মনে করেন? (একাধিক উত্তর প্রযোজ্য)
ক. শিক্ষার্থীকে নিঃসংকোচে কথা বলার মাধ্যমে তার আবেগ প্রকাশ করার মত নিরাপদ পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করা
খ. শিক্ষার্থীর আচরণের পরিবর্তনের জন্য ও পড়াশোনায় আরো মনযোগী হতে পরামর্শ
গ. শিক্ষার্থী যে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তার পেছনে শিক্ষার্থীর কি ধরনের আবেগ কাজ করছে তা শনাক্ত করা
ঘ. শিক্ষার্থী এ পরিস্থিতি থেকে কিভাবে বের হতে পারে তা জানতে চাওয়া
ঙ. উপরের সবগুলো
চ. উপরের কোনটিই নয়
প্রশ্ন ২: মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকদের পালনীয় নীতিসমূহ বিবেচনা করলে, রাকিবের সাথে কথোপকথনের সময় শরিফুল সাহেব নিচের কোন কোন নীতিগুলো অনুসরণ করেছেন?
ক. শিক্ষার্থীর গোপনীয়তা রক্ষা করেছেন
খ. শিক্ষার্থীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা
গ. শিক্ষার্থীর আচরণ বা কাজকে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যতার ভিত্তিতে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেছেন
ঘ. শিক্ষার্থীর আচরণের প্রতি নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছেন
ঙ. উপরের সবগুলো
চ. উপরের কোনটিই নয়
প্রশ্ন ৩: রাকিবের সাথে কথোপকথনের ক্ষেত্রে শরিফুল সাহেব আর কোন কোন কাজগুলো করলে তা অধিক কার্যকর হত?
ক. যে মেয়ের সাথে রাকিবের সম্পর্ক হয়েছে তার পরিচয় জেনে পরবর্তিতে তার সাথে কথা বলা
খ. এই বয়সে প্রেমের সম্পর্ক থাকার কারণে পড়াশোনার উপর এর সম্ভ্যাব্য নেতিবাচক দিক সম্পর্কে রাকিবকে ধারনা দেওয়া
গ. রাকিব কিভাবে এ ধরনের সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে পারে সে ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া
ঙ. রাকিবের অভিভাবককে এ ব্যাপারে অবহিত করা এবং তাদের সাথে পরামর্শ করা কিভাবে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে সম্পর্ক থেকে বের করে আনা যেতে পারে
চ. উপরের সবগুলো
ছ. উপরের কোনটিই নয়
তথ্যপত্র:
মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে শিক্ষকদের পালনীয় নীতিসমূহ
প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে, এই ওরিয়েন্টশনের মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান কেবল শিক্ষার্থীর মানসিক সমস্যার লক্ষণ বুঝতে শিক্ষককে সহায়তা করবে।
তিনি কোনােভাবেই অ্যাসেসমেন্ট ও রােগনির্ণয় করবেন না এবং ব্যবস্থাপনা প্রদান। করবেন না। শিক্ষক প্রাথমিক সহায়তা প্রদান করবেন এবং রেফারেল হিসেবে ভূমিকা রাখবেন।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য একজন শিক্ষকের কয়েকটি নৈতিক বিষয়ে লক্ষ্য রাখা অত্যাবশক-
গােপনীয়তা বজায় রাখা
মানসিক সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্যকে কোনােভাবে প্রকাশ করা যাবে না । যদি এমন কোনাে পরিস্থিতি ঘটে যেখানে শিক্ষার্থীর নিজের ও অন্যের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে তখন শিক্ষার্থীর অনুমতি নিয়ে তার সাথে সম্পর্কিত পরিবারের সদস্যদেরকে অবহিত করা যাবে ।
গ্রহণযােগ্যতা
প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সমস্যা ও সমস্যার প্রকৃতিকে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যতার ভিত্তিতে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করতে হবে। কোনাে ভাবেই কারও সমস্যাকে ছােট বা বড় করে দেখা যাবে না। এক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষার্থীর আচরণ ও প্রকৃতিকে তার নিজের মূল্যবােধ, চিন্তাধারা, ও অভিজ্ঞতা থেকে বিশ্লেষণ করা থেকে বিরত থাকবেন এবং তাকে ব্যক্তি হিসেবে গ্রহণ করবেন।
নিরপেক্ষতা বজায় রাখা
তথ্য ও উপাত্তের উপর ভিত্তি করে নিরপেক্ষভাবে শিক্ষার্থীকে যাচাই করতে হবে যা শিক্ষার্থীর প্রতি সেবাদানকারীর মনােভাব ও বিশ্বাস সৃষ্টির মূল ভিত্তি।
কোনােভাবেই শিক্ষার্থীকে কোনো ধরনের নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য দ্বারা চিহ্নিত করা যাবে না। শুধু বিশেষজ্ঞরাই এই সম্পর্কে মতামত দিতে পারবেন।
বিশ্বাস করা
মানসিক স্বাস্থ্যর ক্ষেত্রে সেবা গ্রহণকারীকে বিশ্বাস করা হচ্ছে একটি মৌলিক নীতি ।
সীমারেখা বজায় রাখা
শিক্ষার্থী যতটুকু প্রকাশ করতে আগ্রহী হয় তাকে সেভাবে প্রকাশ করতে উৎসাহিত করা। কোনো ভাবেই তাকে তথ্য প্রকাশে ও পরবর্তীতে তার সাথে যোগাযোগ করতে চাপ প্রয়োগ করবেন না।
তবে তিনি উল্লেখ করতে পারেন যে, “পরবর্তীতে, তুমি যদি আমাকে বিশ্বাস কর তবে তুমি আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারো।,,
সম্মান প্রদর্শন
প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সম্মান প্রদর্শন করা । সেবা গ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীকে যথাযথভাবে সম্মান করা ও অন্যান্য পরিস্থিতে তার সাথে অন্য সকল শিক্ষার্থীর মত আচরণ করা।
ক্ষতি না করা
এমন কোনো ধরনের আচরণ (বাচনিক ও অবাচনিক করা সমীচীন হবে না যা শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত, পারিবারিক, শিক্ষাগত ও সহপাঠীদের সাথে বন্ধন বিষয়ে কোনো ক্ষতি না হয়।
গোপনীয়তা রক্ষা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে না পারলে সেক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীর ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়ায়।
স্বপ্ন ইশকুল এর শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণসমূহ (পর্ব-২) আর্টিকেলটি শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রকাশিত হয়েছে। এই সংক্রান্ত আপনার কোনো মতামত বা অভিমত থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। ফেসবুক পেইজ এবং ইউটিউবে আমাদের আপডেট পেতে চোখ রাখুন।